অটিজম শিশুর প্রথম লক্ষণ গুলো কী

অটিজম একটি জন্মগত জন্মগত রোগ যা  মায়ের গর্ভ থেকে একটি শিশু  অটিজমের বৈশিষ্ট্য নিয়েই জন্ম নেয়। সাধারণত একটি শিশুর জন্মের সাথে সাথেই অটিজম এর বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষণীয় হয় না।।শিশুর যখন বয়স বাড়তে থাকে তখন শিশুর অটিজম লক্ষণগুলো দেখা দিতে থাকে আচরণে পরিবর্তন হয়। যখন একটি শিশু অটিজমে  আক্রান্ত হয় মা-বাবারা লক্ষ করতে পারে যে অন্য শিশুদের থেকে তার শিশুর বৈশিষ্ট্যগত অনেকগুলো পার্থক্য । কিন্তু অনেক মা-বাবা লক্ষণগুলোকে গ্রাহ্যতা দেওয়া না যার ফলে শিশুদের এ ধরনের সমস্যা গুলো আরো জটিল হতে থাকে।অনেক অভিভাবক এর মতে ৩ বছর বয়স পর্যন্ত খুব স্বাভাবিক শিশুর মত ছিল উনার সন্তান। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার মধ্যে অন্য শিশুদের পার্থক্য লক্ষনীয় মাত্রা দেখা দেয়।অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের মাঝে নানা ধরনের মানসিক সমস্যা খুব ভাবে লক্ষণীয় হয়।  পূর্বের কোন বিষয়কে মনে না করতে পারা,পূর্বের বিষয়গুলোকে একদম ভুলে যাওয়া,  আচরণের অস্বাভাবিক পরিবর্তন, কথা মুখে জড়িয়ে যাওয়া, অতিমাত্রা আবেগ ইত্যাদি।

 অনেক শিশু জন্ম থেকেই শিশুর স্বাভাবিক ভাবে জীবন-যাপন করে পরবর্তীতে বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার মধ্যে মানসিক অনেকগুলো পরিবর্তন ভালোভাবে লক্ষ্য  করা যায় দিন দিন শিশুদের মধ্যে এ ধরনের লক্ষন বাড়তে থাকে।

 অটিজম সমস্যায় আক্রান্ত শিশুদের কে বলা হয় অটিস্টিক। ডাক্তারদের মতে এই ধরনের শিশুদের সাধারণ একটি সমস্যা বয়স বাড়ার সাথে সাথে শিশুর কথা বলে কমে যায়। এমনকি তারা অনেক সময় কথা বলতে পারে না। এই ধরণের সমস্যাকে র  মেডিকেলের ভাষায় বলা হয় অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার। আর কোন শিশু যদি অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার   ভোগে তাহলে শিশুরা অন্যের সাথে যোগাযোগ স্থাপন বা সম্পর্ক তৈরি করতে বাধাগ্রস্ত হয়।অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার বা এএসডি আক্রান্ত শিশুরা বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যকারিতা একেকজনের একেক ধরনের হয়ে থাকে। অটিজম এ শব্দটি মানসিক রোগ বলে ধারনা করে অনেকে মূলত গবেষকদের মতে এটি এক ধরনের  স্নায়ুবিক বিকাশ জনিত সমস্যা। কোন শিশুর স্নায়ুবিক বিকাশ ভালোভাবে না হয় তাহলে সে অটিজম রোগের লক্ষণগুলো তার মধ্যে দেখা দেয়। 

 সাধারণত শিশুদের এক থেকে তিন বছরের মধ্যে লক্ষণগুলো দেখা দেয়।অটিজম সমস্যার কারণে  শিশুদের মধ্যে যে পরিবর্তন দেখা দেয়-

সমবয়সীদের সাথে না থাকা

অটিস্টিক শিশুরা  তাদের সমবয়সীর  সাথে মিশতে পারে না। তারা সাধারণত যে 

অন্য শিশুদের সাথে খেলা করা, গল্প করা বা তাদের সঙ্গ তার ভালো লাগবে না।অটিস্টিক শিশুরা একা একা থাকাতে পছন্দ করে।একঘুয়ে হয়ে ঘরের নির্দিষ্ট একটি জায়গায় নিজের মতো থাকে।অন্যদের সাথে মিশলে বিরক্ত বোধ করে।  পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ

অটিস্টিক শিশুদের আরো একটি লক্ষন একই কাজ,একই কথা বার বার করবে।যেমন তাদের প্রতিদিনের একই খেলনা নিয়ে খেলা। একই খেলা একই প্যাটার্নে প্রতিদিন খেলা। একই কথা সে বার বার উচ্চারণ করবে প্রতিদিন।আবার কিছুদিন হতো অন্য আরেকটি বাক্য।তাকে ভিন্ন নিয়মে খেলতে দিলে তারা এতে বিব্রত হয়। তারা একই কাজ বার বার করে যেমন একটা গ্লাসে পানি আনতে বললে একই ভাবে সে বার বার পানি আনবে।

চোখে চোখ রেখে কথা না বলা

অটিজম আক্রান্ত শিশুদের আরো একটি লক্ষনীয় সমস্যা চোখে চোখ রেখে কথা বলতে না পারা। তবে এই সমস্যা থাকলেই যে আপনার শিশু অটিজমে আক্রান্ত কথা মোটেও ঠিক না।সাধারণত  অটিস্টিক শিশুদের এই সমস্যা লক্ষনীয়।যেমন আপনার চোখে চোখ রেখে কথা না বলা আপনার কথায় মনোযোগী না হওয়া ।

কথা বলার জড়তা

অটিজম   আক্রান্ত শিশুরা  কথা বলার সময় কথা অসম্পূর্ণতা থাকে এবং তাদের কথার মধ্যে জড়তা থাকতে পারে। অনেক শিশুর ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা একেবারেই কথা বলতে পারছে না। অনেকেই বয়সের একটি মুহূর্তে  কথা বলল পরবর্তীতে আস্তে আস্তে কথা বলা ভুলে যায়।

ধৈর্য্য কম থাকা

 এ ধরনের শিশুদের শান্তর ধৈর্র্য্য শক্তি খুব কম থাকে। তারা কারও জন্য অপেক্ষা করা কোন কাজ অনেক সময় দিয়ে করা এগুলো সাধারণত তারা করতে চায় না। তারা একটি কাজ করতে গিয়ে কিছু সময় পর এটা অসম্পূর্ণ রেখে দেয়। এ ধরনের শিশুদের  মেজাজ খিটখিটে থাকে।

সামাজিকীকরণ অনুপস্থিত থাকবে

সামাজিক কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়া বা অন্যদের সাথে মিশার ব্যাপারে তাদের অনীহা থাকে। অন্যের সাথে কেমন ব্যবহার করতে হয় , বড়দের সাথে কেমন ব্যবহার করতে হয় ,ছোটদের সাথে কেমন ব্যবহার করতে হয় তারা তা জানেনা। এ ধরনের আচরণ গুলো তাদের স্নায়ুবিক বিকাশের কারণে এই ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। তারা সামাজিকীকরণ এর ব্যাপারে কিছুটা ভিন্ন। কোন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা তাদের কাছে এক ধরনের বিব্রতকর মনে হয়।

 উপরের লক্ষণগুলো যদি দেখা দেয় তাহলে আপনি শিশুকে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন। সাধারণত এগুলো প্রাথমিক ধারণা কেবলমাত্র । আপনার শিশু অতিজম আক্রান্ত কিনা এ ব্যাপারে আপনাকে বিস্তৃত এবং ভাল পরামর্শ দিতে পারে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। তাই আপনি পরিচিত কোন ভাল মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে আপনি কনসালটেন্সি করতে পারেন ।

সর্বশেষ কথা একটি শিশু অটিজমে আক্রান্ত হওয়া মানে এই না যে আপনি শিশুটা সমাজের জন্য অকেজো। অটিজম আক্রান্ত শিশুরা অনেক প্রতিভাবান হয়ে থাকে। অতএব এ ব্যাপারে আপনি হতাশ গ্রস্ত না হয়ে আপনার শিশুর একজন ভালো সঙ্গী হোন আপনার শিশুকে সময় দিন।আপনার  শিশু হোক আগামী দিনের

Scroll to Top